আহসান হাবিব রুবেল,ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়ায় পবিত্র ঈদুল আযহা সামনে রেখে পশু কোরবানির সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা।
সরেজমিনে মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে রুহিয়া থানাধীন রুহিয়া, রামনাথ, আখানগর, ঢোলারহাট, পাটিয়াডাঙ্গী বাজার ঘুরে দেখা যায়, কামারপাড়াগুলো টুংটাং শব্দে মুখর। কয়লার আগুনে লোহা পেটাতে পেটাতে ঘাম ঝরছে শ্রমিকদের। চোখেমুখে ক্লান্তির ছাপ থাকলেও বিরাম নেই তাদের হাতে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে দা, ছুরি, চাপাতি ও বঁটি তৈরির কাজ। একইসঙ্গে পুরোনো যন্ত্রপাতি শান দিতেও আসছেন অনেকেই।
৭ জুন শনিবার মুসলমানদের পবিত্র ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে। বছর ঘুরে বছর আসে। কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে চারদিকে আনন্দ-উল্লাস, উৎসব ও কোরবানি গরু কেনার ধুম পড়েছে। কোরবানির ঈদের দিন আল্লাহ নৈকট্য লাভের আশায় ত্যাগ করা পশুকে জবাই করতে প্রযোজন যন্ত্রের। তাই মানুষ ছুটছেন কামারশালায়। সারাবছর ব্যস্ততা না থাকলেও কোরবানির ঈদে অপহিার্য ছুরি, দা, দামাসহ বিভিন্ন জিনিস তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন রুহিয়া রামনাথ বাজারের কামারের দোকান গুলোতে। তাই দিন-রাত তৈরি করছেন নানা যন্ত্রপাতি। রুহিয়া থানার হাট এলাকায় প্রায় ৬টি দোকানে গেলেই চোখে পড়ে কামার শিল্পীদের কর্মব্যস্ততা। তারা গরম লোহা পিটিয়ে তৈরি করছেন দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার্য যন্ত্রপাতিসহ পশু কোরবানিতে ব্যবহারের নানা ধরণের ছুরি, চাপাতি, দা, বঁটি, দামা। কামার শিল্পীদের বেশিভাগই হিন্দু সম্প্রদায়ের।
স্থানীয় কামার আনিছুল, মফাজুল, বেলাল জানান, সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও কোরবানির ঈদ এলে কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায়। তবে লোহা ও কয়লার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে, ফলে লাভের পরিমাণ কমে গেছে। এছাড়া, চীনা পণ্যের আগ্রাসনে স্থানীয় হস্তশিল্পের চাহিদা কমে যাওয়ায় তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কামাররা আরও জানান, অনেকেই পুরোনো দা-বটি শান দিতে আসছেন, আবার কেউ কেউ নতুন সরঞ্জাম তৈরির অর্ডার দিচ্ছেন। তবে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির কারণে পণ্যের দাম বাড়াতে হচ্ছে, যা ক্রেতাদের জন্য কিছুটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
m/i